বাংলার সংস্কৃতিতে ক্রিকেটের একাল-সেকাল!

ঢাকায় সর্বপ্রথম ক্রিকেট খেলার ইতিহাস সম্পর্কিত সবচেয়ে পুরাতন খবরটি পাওয়া যায় ১৮৫৮ সালের। “ঢাকা স্টেশন” বনাম “হার ম্যাজেস্টিস ফিফটি ফোর্থ রেজিমেন্টের” -এর মধ্যে খেলাটি হয়।[১] ১৮৬৬-৬৭ সালে ঢাকার জয়েন্ট ম্যাজিস্টেট ছিলেন চার্লস স্টুয়ার্ড, তার স্মৃতি কথায় তিনি লিখেছিলেন “ঢাকায় ক্রিকেট খেলার একটি মাঠ ছিল ও নববর্ষের দিনটী পালিত হত সে মাঠে ক্রিকেট খেলে”। ঢাকার প্রথম দেশীয় ক্রিকেট খেলোয়ারদের সম্পর্কে জানা যায় ১৮৭৬ সালের পত্রিকার খবর থেকে। খেলা হয়েছিল “ইউরোপীয়ান” ও “নেটিভ” তথা দেশীয়দের মাঝে। খেলার মাঠ ছিল “ওল্ড লাইনস” যা বর্তমানে পুরান পল্টন নামে পরিচিত।[২] এরপর ক্রিকেট খেলা আরও জোরদার হয়ে ওঠে যখন ঢাকা কলেজে “ঢাকা কলেজ ক্লাব”, এই ক্লাবের সদ্যসরা নিয়মিত ক্রিকেট চর্চা করত ও বিভিন্ন জায়গায় ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে যেত। সারা বাংলায় প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ক্লাব হিসাবে এই ক্লাব খ্যাতি অর্জন করেছিল। ১৮৯১ সালের পত্রিকার খবরে জানা যায় প্রথমবারের মত কলকাতায় দু বাংলার মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছিল। ঢাকা কলেজ ক্লাবের সাথে শিবপুর কলেজের মধ্যে। দু দিন ব্যাপি এই
ম্যাচে ঢাকা জয়লাভ করে।[৩][৪] ১৯২৬ সালে এম.সি.সি. কলকাতার ইডেন গার্ডেনে অবিভক্ত ভারতের সঙ্গে খেলে। ১৯৩৫ সালে বাংলা রঞ্জি ট্রফিতে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়।বিভক্ত দুই পাকিস্তানের যে অংশ বাংলাদেশ নামে স্বাধীন হয় তাদের শক্ত মনকে অনেকাংশেই নরম করে ফেলেছিলো ওয়াকার,ওয়াসিম,ইমরান,ইনজামাম কিংবা আফ্রিদি যা তাদের পূর্বপুরুষ ইয়াহিয়া,ভুট্টো কিংবা আইয়ুব খান করতে পারেননি
পূর্বপুরুষ ইয়াহিয়া,ভুট্টো কিংবা আইয়ুব খান করতে পারেননি

এটা আমাদের মিরপুর স্টেডিয়ামের একটা ছবি যেখানে পিছনের সব ভুলে ক্রিকেট ধর্মে আবদ্ধ হয়েছে জাতি-

অনেকের কাছে ব্যাপারটি দৃষ্টিকটু হলেও আমি মনে করি জাতি হিসাবে এটা পজিটিভ ইমেজ—কেউ অনন্তকাল কারো শত্রু হতে পারেনা—তাদের বাবা আমার বাবাকে অত্যাচার করেছিলো শুধুমাত্র এই একটা ব্যাপারকে সামনে নিয়ে এসে জাতীয়তা দেখানোটা আমাদের এই প্রজন্মের চোখে জাতীয়তা নয়—আর এই মুক্ত সংস্কৃতির পরিবর্তনের জন্য ক্রিকেট সাধুবাদ পাবার যোগ্য
ঠিক একইভাবে মিরপুরে গ্যালারি ভর্তি বাংলাদেশী ইন্ডিয়ার সাপোর্টারও আমাকে বিমোহিত করে-

ক্রিকেট আমাদের অনেকাংশে সহনশীল করেছে

কখনো কখনো জাতীয় প্রতিচ্ছবি গ্যালারিতে দেখা গেছে

আবার কখনো একটি পরাজয় জাতি-বিদ্বেষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে

ব্যক্তিগতভাবে বীরেন্দ্র শেওয়াগ আমাদের ক্রিকেট টিমকে নিয়ে উপহাস করার পর থেকে আমি ক্রিকেটে এন্টি ইন্ডিয়া হওয়াকে প্রেফার করতাম ,এমনকি গত দশকে আমার চোখে সবথেকে হিপোক্রেটও সে—- আমার ধোনিকে খুব ভালোলাগে যা আমাকে কিছুটা হলেও ইন্ডিয়া প্রিয় করে তুলেছে,আমার মনে হয় তার থেকে ভালো ক্রিকেট কেউ বোঝেনা ,এমনকি এতো বড়ো মনের ক্রিকেটার এই প্রজন্মে নেই বললেই চলে।

বর্তমানে আমরা ইন্ডিয়া -পাকিস্তান থেকে মুখ ঘুরিয়ে স্বভাবতই রুচির পরিবর্তন করতে শুরু করেছি–

আমাদের সোনার ছেলেরা ভালো খেলতে শিখেছে,প্রতিরোধ করছে সদর্পে-পৃথিবী জেনেছে মিরপুরে আমাদের পক্ষে যে কোনো কিছু করে দেখানো সম্ভব…
এখন ক্রিকেট আমাদের অভ্যন্তরীণ মেলবন্ধনের এক প্রাণের উৎসব–

ক্রিকেট আমাদের হাসায় —

ক্রিকেট আমাদের কাদায় —

কেবল সংস্কৃতি নয় ,আমাদের আইডিওলজিকেও নাড়া দেয়.ক্রিকেটের রানিং প্লেয়ার হওয়া সত্ত্বেও মাশরাফির সংসদ সদস্য হওয়া সে কথাই বলে

সবশেষে সবার জন্য শুভ কামনা,এইবার ভালো কিছু হবে..ইনশাআল্লাহ